আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ) এর জীবনী
যাদের জ্ঞানসাধনায় ধূলার ধরণী সমৃদ্ধ এবং মাটির মানুষ উধ্বলােকে মহিমান্বিত হয়েছে, হযরত আবদুল কাদের জিলানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি নিঃসন্দেহে তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। তিনি সংকীর্ণভাবে ইসলাম ও কর্তব্যনীতির চর্চা করেন নাই-অসীম সহৃদয়তা ও আশ্চর্য অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে তিনি মানবহৃদয়ের অন্তস্থলে প্রবেশ করতেন। তিনি জীবনকে যে ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন, তা মানবপ্রেমের রসে কোমল ও সু-শ্যামল এবং যে আকাশে তাকে বিস্তীর্ণ করেছিলেন, তা সত্যের অমল-জ্যোতিতে দীপ্যমান এবং কল্যাণের পুণ্যপ্রবাহে তরংগায়িত।
তার অগণিত জীবন-চরিতে বর্ণিত এবং লক্ষ লক্ষ ভক্তকূলের ভক্তি-নন্দিত বহুল প্রচারিত কাহিনী থেকে আসল ব্যক্তিত্ব অনুধাবন করা কঠিন ব্যাপার। একদল তাকে এক বিশিষ্ট সুফী-সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে অভিহিত করেন, অনেক তার 'কারামত বা অলৌকিকত্বের ব্যাখ্যায় পঞ্চমুখ। কিন্তু নিরপেক্ষ সমালােচকের দৃষ্টিতে তিনি একজন সংস্কারকামী, সত্যাশ্রয়ী, শুদ্ধাচারী ধর্মপ্রচারক ও তত্ত্বজ্ঞানী ছিলেন।
বিখ্যাত ধর্মতত্ত্ববিদ ও দার্শনিক মহীউদ্দিন ইবনে-আল-আরাবী তাকে 'কুতব আখ্যায় ভূষিত করেছেন। কুতব’ শব্দের ধাতুগত অর্থ হল পৃথিবীর বিভেদ-বিন্দু এবং সূফী মতে এই শব্দের তাৎপর্য হল যার অনন্যসাধারণ সাধনা-আরাধনায় ও চির-সজাগ দৃষ্টিপাতে একটা জাতির জীবন সুসংস্কৃত, রূপায়িত ও স্বার্থক হয়ে উঠে।
হিজরী ছয় শতকে সারা মুসলিম জগতে যেমন রাষ্ট্রীয় স্বেচ্ছাচারিতা চলেছিল, সেই রকম ধর্ম ও নীতির দিক দিয়েও মুসলিমরা দেউলিয়া হয়ে পড়েছিল। তখনকার ইসলাম ছিল প্রাথমিক যুগের খাটি ও মানব-জীবনের কল্যাণকামী পর্যায়ে বহু নিম্ন স্তরের। তখন বাগদাদে আব্বাসীয় খলিফাদের পূর্ণ প্রতিপত্তি পার্থিব সুখ-সম্পদ ও কৃষ্টি-সভ্যতার চরম শিখরে উঠেছিল, সেই রকম দুর্নীতি, অনাচার ও উচ্ছলতার লীলাভূমিও হয়ে উঠেছিল-খলিফা থেকে অতি সাধারণ মানুষ পর্যন্ত।
কারও ধর্ম বা নীতির বড় একটা বালাই ছিল না। ইসলামের অবনতির এই চরম সন্ধিক্ষণে 'বাব- আল-হালবায়' আবদুল কাদের জিলানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তার খােতবা বা বক্ততা দিতেন। খলিফা, কাযী, গভর্নর, নাগরিক, ব্যবসায়ী, ধর্ম-ব্যবসায়ী, প্রত্যেককে লক্ষ্য করে এবং প্রত্যেকের দোষ-ক্রটি ও পাপ-দুর্নীতিকে কঠোর ভাষায় নির্ভয়ে সমালােচনা ও প্রকাশ্যে নিন্দাবাদ করতেন।
প্রথমে তার স্বর ছিল ক্ষীণ, তার মজলিসে সমাগম ছিল মাত্র দশবার জন লােকের। কিন্তু কালক্রমে তার সভায় সন্তর হাজার লােকেরও বেশী সমাগত হত এবং তার অমৃতময় বাণী ও অমূল্য শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য স্বয়ং খলিফা-উজীররাও ভিড় জমাতেন এবং তার আর্শিবাদ লাভে ধন্য মনে করতেন।
এই চিরবরেণ্য ধর্ম-শিক্ষক সৈয়দ আবু মােহাম্মদ আবদুল কাদের ইরান দেশের জিলান শহরে ৪৭০ হিজরীর রমযান মাসে জল্লাহণ করেন (১০৭৭ খৃঃ)। তিনি জন্মস্থানের নামানুসারেই নিজের নিসবা "জিলানী গ্রহণ করেন। তার পিতা আবু সালেহ মূসা রাহমাতুল্লাহি আলাইহি একজন পাকা আলেম ও অত্যন্ত ধর্মভীরু লােক ছিলেন।
আবু সালেহ মুসা রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বংশ-মর্যাদয় নবী-নন্দিনী ফাতেমা-জোহরার পুত্র ইমাম হাসানের বংশধর ছিলেন এবং তার স্ত্রী ছিলেন বিবি ফাতেমা রাদি আল্লাহু আনহার অপর পুত্র শহীদে-কারবালা ইমাম হােসেনের বংশধর আবদুল্লাহ সাওমেরীর কন্যা।
বাল্যকাল হতেই আবদুল কালে জিলানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি শান্ত, নম্র, চিন্তাশীল ও জ্ঞানানুরাগী ছিলেন। তার বাল্যজীবন আরবী ও ফারসী ভাষা, কুরআন ও প্রাথমিক শিক্ষায় অতিবাহিত, হয় স্থানীয় মাদ্রাসায়। মাত্র আঠার বৎসর বয়সে তিনি বিদ্যা অর্জনের জন্য সুদূর বাগদাদ নগরীতে গমন করেন এবং বিখ্যাত নিজামিয়া মাদ্রাসায় তাফসীরে কুরআন, হাদীস, ফিকাহ, উসুল প্রভৃতি ধর্মতত্ত্ব এবং তর্কশাস্ত্র, ইতিহাস ও দর্শনে উচ্চশিক্ষা আরও করেন।
বাগদাদে গমনকালে একটি ঘটনায় তার অসাধারণ মাতৃভক্তি ও আশ্চর্য সত্য-প্রীতির পরিচয় পাওয়া যায়। তার স্নেহময়ী মাতা তার প্রবাস-জীবনের একমাত্র সম্বলস্বৰূপ চল্লিশটি (মতান্তরে আশিটি) সােনার দিনার তার জামার মধ্যে সেলাই করে দেন এবং বিদায়কালে এই উপদেশ দেন, জীবনে কোন অবস্থাতেই মিথ্যা বলবে না। কিশাের আবদুল কাদেরের হৃদয়-ফলকে যেন কথা কয়টি গাঁখা হয়ে গিয়েছিল। হামাদান নামক স্থানে তার সহযাত্রী দস্যুদল কর্তৃক আক্রান্ত ও তাদের সর্ব্ব লুষ্ঠিত হয়।
দস্যুদের মধ্যে একজন তার নিকট কিছু আছে কিনা জিজ্ঞাসা করলে তিনি অম্লানবদনে স্বর্ণমুদ্রাগুলি কথা স্বীকার করেন ও সেলাই করা স্থান দেখিয়ে দেন। বিম্বিত দস্যু তাকে দলপতির নিকট হাজির করল। দলপতি তাকে ভৎসনা করে বলল, তুমি তাে বেশ বােকা! মুদ্রাগুলির কথা স্বীকার করলে কেন? কিন্তু কিশাের আবদুল কাদের দৃপ্ত কণ্ঠে বলেছিলেন, আমি মায়ের নিকট প্রতিজ্ঞা করেছি জীবনে কোনও অবস্থায় মিথ্যা কথা বলব না। তার সরলতায় মুগ্ধ হয়ে দস্যুদল ইসলাম গ্রহণ করে সৎভাবে জীবনযাপন শুরু করে।
বাগদাদে গভীর মনােনিবেশ সহকারে আবদুল কাদের রাহমাতুল্লাহি আলাইহির তফসীরে কুরআন, হাদীস, ফিকাহ ও অন্যান্য বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেন। তার মেধা শক্তি ছিল তীক্ষন এবং ধারণাশক্তি ছিল অসাধারণ। অল্পকালের মধ্যেই তিনি সর্ববিদ্যায় দক্ষতা অর্জন করেন।
কিন্তু তার স্বাভাবিক আকর্ষণ ছিল মারেফাত' বা আধ্যাত্মিক জ্ঞানলাভের দিকে এবং তাসাউফ বা ইসলামী মর্মবাদেই ছিল তার বেশী ঝোঁক এজন্য বাগদাদের প্রত্যেক সুফী ও দরবেশের সংগে তিনি মেলামেশা করতেন এবং তাদের শিক্ষা গ্রহণ করতেন। এভাবেই বিখ্যাত সাধক হযরত হাম্মাদের সাথে তার পরিচয় ঘটে এবং তার সাহচর্যেই আবদুল কাদের রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তাসাউফ-তত্ত্বে আনলাভ করেন।
কিন্তু পুঁথিগত বিদ্যার্জনের চেয়ে ব্যক্তিগত সাধনা দ্বারাই আধ্যাত্মিক জ্ঞানলাভের দিকে আবদুল কাদের রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বেশী মনােযােগী হন। তিনি শিক্ষা সমাপনের পর নির্জনবাসে অহােরাত্র আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকতেন। এই সময় তিনি সবরকম কৃচ্ছ্রতা অবলম্বন করেন এবং এক ওযুতেই এশা ও ফজরের নামায আদায় করতে থাকেন।
কোন কোন রাতে তিনি বিনিদ্রভাবে সমগ্র কুরআন তেলাওয়াত (আবৃত্তি) করতেন। অতঃপর তিনি বাগদাদ পরিত্যাগ করে সস্তার নামক প্রান্তরে প্রায় পঁচিশ বছর নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করেন। এভাবে কঠোর সাধনার স্বারা তার হৃদয়-মন নূরে-ইলাহীর রওশনীতে উদ্ভাসিত হল, তিনি কামালিয়াত হাসিল করলেন।
৫২১ হিজরীর শেষভাগে আবদুল কাদের রাহমাতুল্লাহি আলাইহি পুনরায় লােকালয়ে আগমন করেন এবং সূফী ইউসুফ আল-হামাদানীর পরামর্শে প্রকাশ্যে ধর্মপ্রচার শুরু করেন। ক্রমেই তার বাণীর জ্বলন্ত মহিমা সকলে উপলব্ধি করতে লাগল এবং দলে দলে তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করল। মাদ্রাসাটির আয়তন কালক্রমে বর্ধিত হয় এবং তার শিষ্যসংখ্যায় ভরে যায়। প্রতি বুধবার রাতে তিনি স্থানীয় ঈদগাহে বক্তৃতা দিতেন।
কিন্তু তার শ্রোতার সংখ্যা দিন দিন এতই বর্ধিত হতে লাগল যে, স্থান সংকুলান না হওয়ায় ঈদগাহটির আয়তন চতুঃপার্শ্বে বৃদ্ধি করা হয়। পরবর্তীকালে সেখানে একটি মুসাফিরখানাও স্থাপিত হয়েছিল। তার খােতবায় ইসলামের অপূর্ব মহিমা লােকচক্ষে নয়ারূপে প্রতিভাত হয়ে উঠে, মানুষের মনের কালিমা বিদুরতি হয়, ইসলাম প্রত্যক্ষভাবে পুনরুজ্জীবিত হয়।
এজন্য তার ভক্তবৃন্দ তাকে মহীউদ্দীন বা ইসলামের নব-জন্মদাতা উপাধিতে ভূষিত করে। তার লক্ষ লক্ষ ভক্তের মধ্যে বিখ্যাত সূফী, আলেম, ফকীহ, খলিফা, উযীর থেকে অতি সাধারণ মানুষকেও দেখা যেত এবং সকলেই তার নিকট সমান ব্যবহার লাভ করত। তার তিতিক্ষা, সাধনা-আরাধনায় একাগ্রতা ও উন্নত জীবন সকলের সম্ভ্রম ও শ্রদ্ধা আকর্ষণ করে, তিনি গাউসুল-আজম' নামে পরিচিতি লাভ করেন।
হযরত আবদুল কাদের জিলানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি প্রকাশ্যে হেদায়েত করতে আরম্ভ করার সময় পরিণত বয়সে পরপর চারবার বিবাহ করেন। এই স্ত্রীদের গর্ভে তাঁর সাতাশজন পুত্র ও বাইশজন কন্যা জন্মগ্রহণ করে। হযরতের পারিবারিক জীবন ছিল বড় মধুময় ও শান্তিময়।
জীবনের শেষদিকে তিনি দিবাভাগে খােতবা ও ফতােয়া দেওয়ায় ব্যস্ত থাকতেন এবং সারারাত্রি ব্যাপী ইবাদতেই মশগুল থাকতেন। পাঁচ দিন ব্যতীত তিনি সারা বৎসরই রােযা রাখতেন এবং মাগরিবের পর একবার মাত্র খানায় বসতেন স্থানীয় ভিখারী ও দুস্থদের সংগে নিয়ে। এভাবে অনন্যমনে সেবা করে প্রায় একানব্বই বৎসর বয়সে ৫৬১ হিজরীর এগারই রবিউস-সানীতে এই বিখ্যাত মনীষী পরলােক গমন করেন। আজও তার লক্ষ লক্ষ ভক্ত মধ্য-এশিয়া, ইরান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে তার মৃত্যু-বার্ষিকী ফাতেহা-ই-ইয়াযদাহম' বেশ শান-শওকতের সাথে পালন করে।
জিলানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহির ওফাতের পর তার মুরিদান বা ভক্তকুল 'কাদেরীয়া-তরীকা নামে কথিত হয়। তার খােতবা ও বাণীগুলির মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ সংগ্রহ হচ্ছে ফতুহ আল-গায়েব' বা দৈবের বাণী। তাছাড়া ফাতাহুর-রাব্বানী নামে আর একটি খােতবা-সংগ্রহ এবং 'কাসিদাতল- গওসীয়া নামক কবিতা-সহ তার বাণী ও উপদেশাবলী আজও বহন করছে।
তিনি বলতেনঃ আমি মানুষের জন্য দোজখের দরওয়াজা বন্ধ করে দিয়ে বেহেশতের দরওয়াজা খুলে দেব। মানবতার প্রতি মমত্ববােধের এ দৃষ্টান্ত দূর্লভ।
তিনি দুনিয়াবী পদ-মর্যাদা ও খ্যাতি-যশের দিকে মানুষের দুর্নিবার আকর্ষণ দেখে অত্যন্ত ব্যথিত হতেন ও তাদের লক্ষ্য করে বলতেনঃ তুমি বল, আল্লাহ এক; কিন্তু তােমার অন্তরে যে বহু বদেবতার স্থান রয়েছে তােমার রাজা, তােমার মনিব, তােমার কাজী ও স্থানীয় কর্তাদের ভয়ে ও ভৎসনাতেই তাে তােমার সারাদিন চলে যায়।
যতক্ষণ না তুমি তােমার মন থেকে এই সব ভয় দূর করে না দিচ্ছ, ততক্ষণ তােমার ঈমান নয়, আর যে-পর্যন্ত না তুমি দুনিয়াবী ধন-দওলত ও শান- শওকতের আশা মন থেকে মুছে না ফেলছ, তােমার তাকওয়াও পূর্ণ হবে না। দুনিয়ার আকর্ষণ ও খ্যাতি-সম্পদের প্রলােভনই আমাদেরকে ক্ষুদে-কর্তাদের সম্মুখে নতি-স্বীকার করতে বাধ্য করে, দৈনন্দিন শত-সহস্র হীনতা-দীনতার মধ্য দিয়ে এসব ভুলে যেয়ে আমরা আমাদেরই সৃষ্ট সহস্র- দেবতার অনুগ্রহ-ভিকারী হই। এক-আল্লাহর আসনে বহুকে স্থান দেই। সত্যিকার মুমীন মুসলিমের পরিচয় তা নয়।
যারা রুটিন-মাফিক আল্লাহর ইবাদতই করে চলে, কিন্তু ইসলামের মর্মবাণী উপলব্ধি করে না, তাদেরকে সাবধান করে তিনি বলেছেনঃ নামায, রােযা, হজ্জ ও তােমার সব সৎ কাজ তােমার পক্ষে অভিশাপ, যদি সে-সবের মধ্য দিয়ে তুমি আল্লাহর সান্নিধ্যলাভ করতে না পার। তুমি অভ্যাসের মধ্যেই আল্লাহর ইবাদত করে চলেছ, আবার এসবের বিনিময়ে তার নিকট বহু কিছু প্রার্থনাও করছ।
যারা সম্মানের ভিখারী, বেহেশত তাদের জন্য নয়; ঈমান কেবলমাত্র কথায় ও কাজে প্রতিপন্ন হয়। কাজ ছাড়া কথার দাম হয় না। আবার আন্তরিকতা না থাকলে কাজের স্বীকৃতি মেলে না। কেবল পুণ্যের লােভে যে সৎকাজ করা হয় তা গ্রহণীয় হয় না-সকাজের দ্বারা আল্লাহর সান্নিধ্যলাভই একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত।
তিনি সাম্যনীতির ভিত্তিতে সমাজ-সংগঠনের পক্ষপাতী ছিলেন। একজন ভােগের প্রাচুর্যে হাবুডুবু খাবে, আরেকজন দারিদ্র্যের নিষ্পেষণে জর্জরিত হবে, তার মতে এ বিধান কখনই ইসলামের নয় তিনি বজ্কণ্ঠে ঘােষণা করতেনঃ আফসােস যে, তােমার পুরাদিনের খাবার মজুদ আছে, আর তােমার নিকট-প্রতিবেশী উপবাস থাকছে।
তােমার ঈমান অসম্পূর্ণ থেকে যাবে যদি তুমি নিজের জন্য যা চাও, অন্যের জন্য তা না চাও। তােমার ঈমানে গলদ থেকে যাবে যদি তােমার নিজেরও পরিবারবর্গের জন্য বেশী খাবার মজুদ থাকে, অথচ একজন অভাবগ্রস্থ তােমার দ্বার থেকে ফিরে যায়।
তিনি ছিলেন উদ্যোগী ও আত্মবিশ্বাসে সফলকাম পুরুষ। তিনি মূর্খ ও অলস অদৃষ্টবাদীকে ধিক্কার দিয়ে সক্রিয় ও গতিশীল জীবনের পথে আহবান জানিয়েছেন, যারা অলস তারাই শুধু বসীবের দোহাই দিয়ে থাকেন। আমাদের কর্তব্য হচ্ছে নিজের কোমর বেঁধে কর্মের পথে, কর্তব্যের পথে অগ্রসর হওয়া, বাকী ব্যবস্থা আল্লাহর। এ প্রখ্যাত মনীষীর এসব তত্ববাণী সর্বযুগের সর্বমানবের উত্তরাধিকার।
আরও পড়ুুন
0 মন্তব্যসমূহ