নতুন পোস্ট

6/recent/ticker-posts

বিখ্যাত মনীষী হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রঃ) এর জীবনী বাংলা

 
হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রঃ)

বিখ্যাত মনীষী হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রঃ) জীবনী

ইসলামের ইতিহাসে মুতাজিলা সম্প্রদায়ের আবির্ভাব একটি বিশেষ ঘটনা। তেমনি আশারিয়া সম্প্রদায়ের আন্দোলনও উল্লেখের দাবি রাখে। এ ব্যাপারে মুসলিম জগতে বহু মতভেদ আছে। যেমন, মুতাজিলা গােষ্ঠী বলেন, কুরআন আল্লাহর সৃষ্ট বস্তু। কিন্তু অনেকেই এ বিষয়ে মত পােষণ করেন না। এমন একজন সুপ্রসিদ্ধ আলেম হযরত আহমদ ইবনে হাম্বল (র)। তিনি বলেন, কুরআন সৃষ্ট নয়। আর এজন্য বাগদাদের শাসক তাকে নির্মম ভাবে নির্যাতিত করেন। তাঁর ওপর এক হাজার বার বেত্রাঘাত করা হয়। তার পরনের পাজামা খুলে পড়ার উপক্রম হয়। 

কিন্তু আল্লাহ অলৌকিক দুখানি হাত সৃষ্টি করে তার ইজ্জত রক্ষা করেন। হাত দুখানি পুনরায় তাঁর পাজামা পরিয়ে দিয়ে মিলিয়ে যায়। কিন্তু এত নিগ্রহ সহ্য করেও তিনি তাঁর বিশ্বাস ও মতবাদে অটল থাকেন। কথিত আছে, তাকে যখন বন্দী করে আনা হয়, তখন দরবারের এক দারোয়ান তাকে একান্তে বলে, আপনার কোন ভয় নেই। আপনি আপনার মতে অবিচল থাকবেন। দারােয়ান আরও বলে, একবার চুরির দায়ে আমারও হাজার বেত্রদণ্ড হয়। তবুও আমি আমার অপরাধ স্বীকার করিনি। শেষ পর্যন্ত মিথ্যার ওপর অনড় হয়ে দাড়িয়েও আমি মুক্তিলাভ করি। 

কিন্তু আপনি তাে দাঁড়িয়ে আছেন সত্যের ওপর। অতএব আল্লাহর রহমতে আপনার জয় সুনিশ্চিত। এই দারােয়ানটির কথা হযরত আহমদ ইবনে হাম্বল (র) আজীবন ভােলেননি। কেননা, সত্যিই সেদিন তিনি মুক্তি লাভ করেছিলেন । অবশ্য একথা ঠিক, তাকে ছেড়ে দেয়া হলেও ঐ বেত্রাঘাতের ফলেই তার মৃত্যু হয়। ইসলামের ইতিহাসে এভাবে প্রাণত্যাগে বাধ্য করল, তাদের সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? তিনি জবাব দেন, তারা আমাকে গােমরাহ মনে করেই এরূপ করেছে। কাজেই রােজ কিয়ামতে তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযােগ জানাব না।

সুতরাং তার বিরুদ্ধে যে অপবাদ দেয়া হয়, তিনি তা থেকে মুক্ত ছিলেন। ধর্মনিষ্ঠা দিক নিয়ে। তাঁর মর্যাদা ছিল প্রশ্নাতীত। তেমনি ছিলেন অসাধারণ মেধার অধিকারী। আল্লাহর প্রতি আত্মনিবেদিত এই মানুষটি অকারণে মৃত্যুবরণ করতে বাধ্য হন। ধর্মাচরণে তিনি কতখানি সর্তক ছিলেন, তা একটি ঘটনায় অনুমান করা যায়। তার পুত্র একবার একটি হাদীস পাঠ করে হাত বাড়িয়ে তার শ্রোতাদের বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন। হাদীস হলাে-আল্লাহ স্বয়ং হযরত আদম (অ)-এর দেহের মাটির খামীর করেছিলেন। হযরত আহমদ ইবনে হাম্বল (র) তার পুত্রকে বলেন, তুমি যখন এ হাদীসটির ব্যাখ্যা করবে, তখন কখনও ওভাবে হাত বাড়িয়ে তার অর্থ বােঝাবে না।

বাতের অসুখে ভুগছেন এক বৃদ্ধা। ওঠা-বসার ক্ষমতা নেই। তিনি তাঁর পুত্রকে পাঠালেন আহমদ ইবনে হাম্বল (র)-এর কাছে। তিনি যদি দোয়া করেন, তাহলে আল্লাহ হয় তাে তাকে রােগমুক্ত করবেন। পুত্র হযরত আহমদ ইবনে হাম্বল (র)-এর দরবারে এসে মায়ের কথা নিবেদন করল। তিনি অযু করে নামাজে নিমগ্ন হলেন। আর ওই ফাঁকে তাঁর এক সেবক যুবকের কানে কানে বললেন, তুমি এখন চলে যেতে পার। তোমার মাকে দোয়া করার জন্যই তিনি নামাজে মশগুল হয়েছেন। তার কথা শুনে যুবক বাড়িতে ফিরল। আর অবাক হয়ে দেখল মা সম্পূণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

একবার একটি লােক উঁচু জায়গায় বসে অযু বানাচ্ছে। এমন সময় এলেন ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (র) তিনি এক নিচু জায়গায় বসে ওজু করতে শুরু ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (র)। তিনি এক নিচু জায়গায় বসে অযু করতে শুরু করলেন। আর লােকটিও তখন নিচে নেমে এসে অযু সম্পন্ন করল। এ লােকটির মৃত্যুর পর অন্য একজন তাকে স্বপ্ন দেখে। সে বলে, সেদিন ইমাম সাহেবের তাজীমের প্রতি সে লক্ষ্য করেছিল বলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন।

হযরত আহমদ ইবনে হাম্বল (র) একদিন এক বনে পথ হারিয়ে ফেলেন। হঠাৎ এক বেদুইনের সঙ্গে তার দেখা হয়। তার কাছে রাস্তা জানতে চাইলে সে আপন মনে বিড় বিড় করে কী যেন বলতে থাকে। তারপর কাঁদতে শুরু করে। আহমদ ইবনে হাম্বল (র)-এর মনে হয়, বেদুইন বুঝি ক্ষুধার্ত। তাই তিনি তাকে কিছু খাবার দিতে চাইলেন। 


তাতে সে বিরক্ত হয়ে বলে, আপনি কি আল্লাহর ওপর নির্ভরশীল নন? আপনি যে আমাকে আল্লাহর বদলে খাবার দিতে চাচ্ছেন? অথচ আপনি নিজেই এক পথহারা পথিক। হযরত আহমদ ইবনে হাম্বল (র) বুঝলেন, আল্লাহ তাঁর পুণ্যবান প্রিয় দাসদের এভাবে এখানে-সেখানে লুকিয়ে রাখেন। আর তার মনের এ কান্ত গােপন কথাটাও বেদুইন ধরে ফেলল। বলল, আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের অবস্থা এরূপ যে, তারা যদি আল্লাহর কাছে সমগ্র জমিনকে স্বর্ণে পরিণত করে দেওয়ার জন্য বলেন, তবে তাই হয়ে যায়। 

তার এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে হযরত আহমদ ইবনে হাম্বল (র) যখন চোখ তুলে তাকালেন তখন দেখলেন, সারা প্রস্তর স্বর্ণময় হয়ে উঠেছে। আর ঠিক এই সময় অদৃশ্য শ্বদ ধ্বনিত হল-হে আমার অতান্ত প্রিয় বান্দা। এ যদি আমাকে বলে তবে সাথে সাথে সময় সৃষ্টিকে এর পদানত করতে পারি। হে আমহদ ইবনে হাম্বল (র)! এমন লােকের সঙ্গে তােমার দেখা হলাে বলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। এরপর আর কখনও তুমি এর দেখা পাবে না। 

হযরত আহমদ ইবনে হাম্বল (র) এর পুত্র এক বছর স্পেনে কাজী পদে নিযুক্ত ছিলেন। একদিন ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বাল (র)-এর বাবুর্চি পুত্রের আটার আমীরের সঙ্গে আরও কিছু আটা মিশিয়ে রুটি বানিয়ে তাঁকে খেতে দেয়। ইমাম সাহেবের কানে কথাটা চলে যায়। তিনি নিজে সে রুটি না খেয়ে তা গরীব-দুঃখীদের মধ্যে বিলিয়ে দেবার জন্য খানসামাকে নির্দেশ দিলেন। আর এও বললেন, খানসামা যেন তাদের বলে দেয়, এ রুটি স্পেনের পূর্বতন কাজীর এবং ইমাম সাহেবর। 

কিন্তু সে রুটি কেউ নিল না। চল্লিশ দিন পর্যন্ত কত ভিক্ষুক এল আর গেল, কিন্তু কেহই রুটি নিল না। অগত্যা তা ফেলে দেয়া হল দজলা নদীতে। আর সেদিন থেকে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (র) দজলা নদীর মাছ খাওয়াই ছেড়ে দিলেন। আগেই বলা হয়েছে, ধর্মাচরণে তিনি অত্যন্ত সজাগ থাকতেন। তিনি যদি দেখতেন যে তার সুরমাদানী রূপার তৈরি, তাহলে তিনি আর তার ধারে-কাছে যেতেন না। 


হযরত সুফিয়ান সাওরী (র) মক্কায় অবস্থান করছেন। তার কাছ থেকে হাদীস শােনার জন্য ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (র) মক্কায় গেলেন। প্রতিদিনই তিনি তাঁর দরবারে হাজির থাকেন। কিন্তু একদিন কোন কারণবশত এলেন না। হযরত সুফিয়ান সাওরী (র) তাঁর খোজ এক শিষ্যকে পাঠালেন। 

খাদেম গিয়ে দেখেন, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (র) শতছিন্ন একখানি কাপড় পরে চুপচাপ বসে রয়েছেন ঘরে-যেন আত্মগােপন করে আছেন। জানা গেল, তাঁর একমাত্র লুঙ্গী ও জুব্বা ধােপাকে ধুতে দিয়ে তিনি পােশাক পরে কোনরকমে লজ্জানিবারণ করছেন। তার এ অবস্থা দেখে খাদেম বলেন, হুজুর, আমি কিছু টাকা দিচ্ছি। আপনি পরণের কাপড় তৈরি করুন। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (র) বললেন, আমি মানুষের দান গ্রহণ করি না। তাহলে আপনি ধার নিন। 

খাদেম বললেন। কিন্তু তাতেও তিনি রাজি হলেন না। তখন যতদিন না ওখানে যাচ্ছেন, ততদিন আমিও এখান থেকে যাব না। বেশ মুশকিলে পড়লেন ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (র)। বললেন, তাহলে এক কাজ কর আমার একখানি বইয়ের পাণ্ডলিপি আছে। দেখ, যদি তা বিক্রি করতে পার। যদি বিক্রি হয়, তাহলে যা দাম পাওয়া যাবে, তা দিয়ে দশগজ মােটা কাপড় কিনে আনাে। পাঁচ গজ দিয়ে পাজামা, আর বাকি পাঁচ গজ দিয়ে জামা বানানাে যাবে। খাদেম বলেন, মােটা কাপড় কেন হুজুর? এবার ধমক দিলেন ইমাম সাহেব, যা বলছি, তাই কর।

বাড়ির কাজ করছিল এক মজুর। সন্ধ্যায় সে যখন চলে যাচ্ছে, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (র) তাঁর খাদেমকে বললেন, ওর যা দাবি, তার চেয়ে কিছু বেশিই দিও। খাদেম বললেন, এর আগেও ওকে বেশি দিতে গেছি, সে নেয়নি ইমাম সাহেব বললেন, তখন হয়তাে ওর মনে লােভ ছিল না। কিন্তু এখন সেটা সৃষ্টি হতে পারে। কেননা, মানুষের মন সব সময়ে একরূপ থাকে না।

একবার তিনি তাঁর থালা বন্ধক রাখেন। যখন সেটা ছাড়তে গেলেন, তখন তাকে দু'খানা থালা দিয়ে তার নিজের থানা চিনে নিতে বলা হয়। কিন্তু তিনি তা চিনতে না পেরে থালার দাবিই ছেড়ে দেন। বহুদিন ধরে তার ইচ্ছা, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মােবারক (র)-এর সঙ্গে তার দেখা করার। একদিন ঘটনাক্রমে স্বয়ং আবদুল্লাহ ইবনে মােবারক (র) এসে পড়লেন ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (র)-এর দরবারে। আর এ খবর তিনি পেয়ে গেলেন তাঁর পুত্র, সালেহ-এর মারফত। হযরত আহমদ ইবনে হাম্বল (র) বলাবাহুল্য, এ খবরে খুব খুশি হলেন। কিন্তু তার পুত্রকে বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে মােবারক (র)-কে নিয়ে যেন এখনই ঘরে না আসেন। অর্থাৎ, তিনি এখনই তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন না।

পিতার কথায় পুত্র বিস্মিত হয়ে যায়। যাকে দেখার তীব্র বাসনা  তাঁর সঙ্গে তিনি কি না এ মুহুর্তে দেখা করবেন না, আশ্চর্য! পুত্রের মনােভাব বুঝতে পেরে আহমদ ইবনে হাম্বল (র) বললেন, আমি কী ভাবছি জান? তাঁর কথাবার্তা, আচার-আচরণ এত আকর্ষণীয় যে, তাঁর সঙ্গে দেখা সাক্ষাতের পর আমি হয়তাে তার প্রতি বিশেষভাবে আকৃষ্ট হয়ে পড়ব। তাঁর বিচ্ছেদ-ব্যথা আমার পক্ষে দুর্বহ হবে। তার চেয়ে এই ভালাে যে, তার দর্শন প্রত্যাশা নিয়ে এভাবেই দিনকটি কাটিয়ে দেব। 

পরে এক সময়, এমন জায়গায় দেখা করব যে, আর বিচ্ছেদের কোন আশঙ্কই থাকবে না। তাঁর একটি অভ্যাস ছিল, কেউ পার্থিব বা সংসার সম্পকীয় কোন প্রশ্ন করলে তিনি নিজে তার সদুত্তর দিতেন। কিন্তু সেটি যদি আধ্যাত্মিক প্রশ্ন হত, তাহলে প্রশ্নকারীকে পাঠিয়ে দিতে হযরত বিশরে হাফী (রঃ)-এর কাছে। তিনি বলতেন, আল্লাহকে আমার প্রতি ভয়ের দরজা খুলে দেয়ার আমি তার কাছে দোয়া করছি। এর ফলে আমার ব্যবস্থা এমন হয়েছে যে, আমি একেবারে নির্বোধ হয়ে চলছি যেন।

হযরত আহমদ ইবনে হাম্বল (র)-এর ইন্তেকালঃ মুহাম্মদ ইবনে খােজাইমা (র) বলেন, মৃত্যুর পর তিনি ইমাম সাহেবকে স্বপ্নে দেখেন, তিনি ধীরপায়ে চলেছেন। কোথায় যাচ্ছেন জিজ্ঞেস করলে বললেন, দারুস সালামে (একটি জান্নাতের নাম)। আল্লাহ আপনার সঙ্গে কেমন আচরণ করলেন? এ প্রশ্নের উত্তরে বলেন, তিনি আমাকে মাফ করেছেন। আর মাথায় পরিয়ে দিয়েছেন মর্যাদার তাজ, আর পরিয়েছেন সম্মানের জুতাে। 

আর বলেছেন, কুরআন পাককে সৃষ্ট বস্তু বলে স্বীকার না করার ফলেই তােমার মর্যাদা এভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। তারপর আল্লাহ আমাকে আদেশ করলেন। সুফিয়ান সাওরীর নিকট যে দোয়াটি শিখেছ, তা পাঠ কর। আমি পাঠ করলাম সবকিছুই আপনার কুদরতের মুষ্টিবদ্ধ। সবকিছুর পরেই আপনি শক্তিশালী। আমি কী চাই, তা জিজ্ঞেস করবেন না। আপনার যা ইচ্ছা, আপনি তাই দান করুন। অতঃপর তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী আমি জান্নাতে প্রবেশ করলাম । 

এক তাপসকে জিজ্ঞেস করা হয়, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (র)-এর কাশফ শক্তি জীবিতকালে বেশি ছিল, না ইন্তেকালের পর? তিনি বলেন ইমাম সাহেবের দুটি দোয়া আল্লাহর দরবারে কবুল হয়। দোয়া দুটি ছিল। হে দয়াময়! যাদের ইমাম দেননি, তাদের ইমাম দান করুন। আর যাদের ইমাম দিয়েছেন, তাদের ইমান যেন বহাল থাকে। হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (র)-এর জন্ম বাগদাদে, ১৬৪ হিজরীতে আর বাগদাদেই পরলােগমন করেন ২৪১ হিজরীতে। তখন তার বয়স হয়েছিল সাতাক্তর। হাদীস শাস্ত্র শিক্ষার জন্য তিনি কুফা, বসরা, মক্কা, মদীনা, ইয়েমেন, সিরিয়া প্রভৃতি দেশ ভ্রমণ করেন।

আরও পড়ুনঃ  

* হযরত আবু আলী শাকীক বলখী (রাঃ) জীবনী

* হযরত শায়খ আবু বকর কেতানী (রাঃ) জীবনী

* হযরত আবু হাসান নূরী বাগদাদী (রাঃ) জীবনী

* হযরত আবু সাইদ খাযযার (রাঃ) জীবনী

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ